ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মিশিগানের বিভিন্ন স্থানে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উৎসব। পহেলা বৈশাখের উৎসব উপলক্ষে প্রতিটি অনুষ্ঠানেই ছিল বৈশাখী সাজ। সবাই রংবেরংয়ের কাপড় পরে অংশ গ্রহণ করেছেন এ অনুষ্ঠানে। বিশেষ করে এখানে বেড়ে ওঠা শিশু কিশোরদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মিশিগানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে উদযাপন করেছে এ উৎসব, এদের মধ্যে রয়েছে,

দুর্গা মন্দির : গত ১৯ এপ্রিল শনিবার ডেট্রয়েটের দুর্গা মন্দির নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, মন্দিরটি সেজে ছিল বৈশাখী সাজে। মন্দিরের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল পূজা, অঞ্জলি,আরাধনা, প্রসাদ বিতরণ। মধ্যাহ্নভোজে ছিল রকমারি তরকারী, ব্যঞ্জন, দই পায়েসসহ বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি। বিকেলে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কবিতা আবৃতি করেন সুবিমল সেনাপতি, সঞ্জয় দেব, পূজা দেব, রণেশ দে ও প্রত্যুষ ধর। ছিল শিশু কিশোরদের গান, নৃত্য, স্থানীয় শিল্পীদের গান ও নৃত্য। ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে ছিল একটি বিশেষ পরিবেশনা এতে ছিলেন চন্দনা ছত্রী, শর্মিষ্টা জেনী, তৃষা শীল, তিলোত্তমা বিশ্বাস, ঐষী দাশ, শ্রেয়া আচার্য, সত্যব্রত পাল, সত্যজিত পাল, অংকিতা দাশ, মধুজা দাশ, প্রত্যুষা ধর, অর্চিতা ছত্রী, অমি দাশ, হৃদিমা পাল, হৃদিমা বিশ্বাস, রাই সেন, প্রত্যুষ ধর, রণেশ ধর, তান সেন, নীল সেন, কৃষ্ণা চন্দ, সর্মিষ্টা দেব, শ্রেয়া দেব, ঋষম পাল, হৃদিমা পাল, শমিষ্কা দেবসহ আরো অনেকে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শর্মিলা দেব রায়, নীপা

রানী দেব, নন্দিতা ঘোষ, উর্মিলা সুত্রধর,বিজয়া চৌধুরী, পল্লবী তালুকদার, মিনাক্ষী ধর, অনামিকা দাশ, নিনতু তরফদার, অদিতি দেব, অংকুর দেব, ঋতশ্রী গুপ্ত, শুভমিতা দেব, চৈতী দত্ত, শ্বাস্বতী তালুকদার, দীশা চৌধুরীসহ আরো অনেকে। তবলায় ছিলেন শিমুল দত্ত, পরেশ দেবনাথ ও চিন্ময় তরফদার। বৈশাখী মেলায় ছিল রকমারি স্টল। দর্শক শ্রোতাদের অংশ গ্রহণে ম্যাগাজিন অনুষ্টান সবাইকে আনন্দ ও বিনোদন দিয়েছে। অনুষ্টানটি পরিচালনা করেন পার্থ দেব তার সাথে ছিলেন নিপেশ সুত্রধর। এতে অংশ গ্রহণ করেন রিপা দেব, শিপ্রা দেব, জবা পাল, মিনতি চৌধুরী, শ্রাবনী দাশ, তৃষিতা দেসহ আরো অনেকে। বাংলাদেশ থেকে আগত অতিথি শিল্পী মৌসুমী দেব রায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়াও ছিল হারান সেন, সঞ্জয় দেব ও অংকুর দেব অভিনীত রম্য নাটক ‘হাড় কিপ্টে’। পার্থ দেব রচিত ও নির্দেশিত ‘কেনে বিয়া করলাম’ রম্য নাটিকায় অভিনয় করেন শ্রাবনী দাশ ও তৃষিতা দে।

আবহাওয়া ভাল থাকায় মন্দিরে প্রচুর জনসমাগম হয়, অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে মানুষজন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করতে এখানে ছুটে আসেন। দুর্গা মন্দিরের সভাপতি পংকজ দাশ ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জল সুত্রধর ও কমিটির নেতৃবৃন্দ সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সবশেষে ছিল রাফেল ড্র। সাউন্ড সিষ্টেম পরিচালনায় ছিলেন বাপ্পী ধর আশু ছত্রী ও প্রতাপ ধর। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন প্রদীপ চৌধুরী, পার্থ সারথী দেব ও নিপেশ সুত্রধর। এমন একটি সুন্দর, সফল ও বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্টান উপহার দেয়ার জন্য মন্দিরের সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরীসহ মন্দির কমিটিকে দর্শক, শ্রোতা ও ভক্তরা ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বেঙ্গলি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশান : মিশিগানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের সংগঠনটি গত ১২ এপ্রিল ট্রয় সিটির একটি হলে নববর্ষ উদযাপন করে বৈশাখী মেলা’র মাধ্যমে। এতে ছিল নৃত্য, গান, রাফেল ড্রসহ বিভিন্ন স্বাদের রকমারি খাবারের স্টল। ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও মেলায় প্রচুর দর্শক সমাগম হয়েছে। প্রবাসের নগর ব্যস্ততায় এ মেলার মাধ্যমে কিছু সময়ের জন্য হলেও বাংলা মায়ের কোলে ফেরা, শৈশবের দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়া। ছাত্রছাত্রীদের এ উদ্যোগ সর্ব মহলে প্রশংশিত হয়েছে।

শিব মন্দির : ২০ এপ্রিল রোববার ওয়ারেন সিটির শিব মন্দিরে নববর্ষ পালিত হয়েছে। বিকেলে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। মন্দিরের সদস্যরা ঢাক ঢোল বাজিয়ে এসো হে বৈশাখ গানের মাধ্যমে নববর্ষকে বরণ করেন। শিশু কিশোরসহ সবাই রংবেরংয়ের কাপড় পড়ে শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করেন। এরপর ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এতে ছিল পটের গান, সঙ্গীত, ছোটদের গান, নাচ, স্থানীয় শিল্পীদের নৃত্য, গান। শিল্পীরা রবীন্দ্র সঙ্গীত, আধুনিক, দেশাত্নবোধক ও লোকগীতি পরিবেশন করেন।

কালী বাড়ি : ১৩ এপ্রিল রোববার ওয়ারেন সিটির কালী মন্দিরে নববর্ষ উদযাপন করা হয়। গণেশ পূজার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল প্রসাদ বিতরণ, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছিল গান, নৃত্যসহ বিভিন্ন পরিবেশনা।