বিজয়া দশমী উদযাপনের মাধ্যমে মিশিগানে শেষ হল দুর্গোৎসব। মিশিগানের বিভিন্ন স্থানে গত ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দিন ব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হয়েছে। প্রবাসের পূজা বেশীরভাগ সময়ই অনুষ্টিত হয় সপ্তাহের কর্ম দিবসে এবং উদযাপন করা হয় সপ্তাহান্তে। গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর মন্দিরগুলোতে আবার পূজা উদযাপন করা হয়।
এতে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্টানসহ বিভিন্ন পরিবেশনা। ছিল পূজা, অঞ্জলি, আরাধনা, আরতি, যজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন মাঙ্গলিক কার্যক্রম। মন্দির কমিটিগুলো পূজার সাংস্কৃতিক অনুষ্টান সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানের জনপ্রিয় শিল্পী, কলাকুশলী এনে ছিলেন।
দুর্গা মন্দির : শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের জন্য দুর্গা মন্দির ব্যাপক কর্মসূচী নিয়েছিল। এর মধ্যে ছিল পূজা, অঞ্জলি, আরাধনা, আরতি, যজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন মাঙ্গলিক কার্যক্রম, চন্ডীপাঠ করেন পারিন্দ্র চক্রবর্তী, অমল কৃষ্ণ দেব ও বকুল পাল। ২৮ অক্টোবর সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে ছিল গান, নৃত্য, কবিতা আবৃতি, একক অভিনয়, সবশেষে ছিল কানাডার মনট্রিল থেকে আগত
দেবপ্রিয়া কর রুমার একক সঙ্গীতানুষ্টান। তিনি রাত ১২ টা অবধি পুরানো দিনের গান, লোকগান পরিবেশন করেন, তার গানগুলো দর্শকশ্রোতারা উপভোগ করেন। অনুষ্টান উপস্থাপনা করেন প্রদীপ চৌধুরী, উজ্জল সুত্রধর, অনামিকা দাশ ও শ্রাবনী দাশ। পরদিন ২৯ অক্টোবর ছিল কবিতা আবৃতি। কবিতা আবৃতি করেন নীলৎপল ভট্রাচার্য, পূজা দেব, রণেশ দে। এরপর ছিল শিশু কিশোর ও স্থানীয়
শিল্পীদের গান, নৃত্য, গীতি আলেখ্য। ছিল আকর্ষণীয় ব্যতিক্রমী ফ্যাশন শো। অনুষ্টানটি দর্শকদের মন জয় করেছে। ছিল আকর্ষণীয় ধর্মীয় নাটক মণীষ ভট্টাচার্য নির্দেশিত ‘দেবী দুর্গা’। ছিল আকর্ষণীয় কাঠিনাচ। অনুষ্টান উপস্থাপনা করেন পার্থ দেব ও নিপেশ সুত্রধর। সবশেষে ছিল বিজয়ার প্রশস্তি বন্ধন ও মিষ্টিমুখ। সবার সাথে সবার কোলাকোলির মাধ্যমে এবারের দুর্গোৎসবের পর্দা নামে।
কালিবাড়ী : গত ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দিন ব্যাপী মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হয়েছে। সপ্তাহান্তে গত ২৮ অক্টোবর শনিবার পূজা উদযাপন ও বিজয়া পূনর্মিলনী করা হয়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কলকাতার জনপ্রিয় কীর্তন শিল্পী অদিতি মুন্সী। জানা গেছে, বিকেল ৪টায় তিনি গান শুরু করেন। পিন পতন নীরবতায় কয়েকশ দর্শকের উপস্থিতিতে তিনি কীর্তন ও লোকগীতি পরিবেশন করেন। গানের সাথে সাথে তার কথা ও অমায়িক ব্যবহার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেন, আপনারা
বিদেশের মাটিতে বাংলা সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে যে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন তা আমাকে আপ্লুত করেছে, মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্টানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় দর্শকশ্রোতাদের আবেগ আপ্লুত হতে দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, অনুষ্টানটি আয়োজন করেছে যৌথভাবে ‘বিচিত্রা’ ও কালিবাড়ী কমিটি। অনুষ্টানে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এমন সুশৃঙ্খল ও অর্গানাইজ অনুষ্টান মিশিগানে নিকট অতীতে হয়নি।
শিব মন্দির : গত ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ দিন ব্যাপী মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হয়েছে। সপ্তাহান্তে গত ২৯ অক্টোবর রোববার পূজা উদযাপন ও বিজয়া পূনর্মিলনী করা হয়। এতে গান, কবিতাপাঠ, ধামাইল পরিবেশিত হয়। রাতে সবাই নৈশভোজে অংশ গ্রহণ করেন।