০৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
মতামত

দুর্গা পূজায় অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিন

বর্ষ পরিক্রমায় আবারো ফিরে এসেছে শারদীয় দুর্গোৎসব। দুর্গোৎসব এখন শুধু সনাতন বাঙ্গালির উৎসব নয় সেটা এখন সর্বজনীনতা ও বিশ্বজনীনতা অর্জন করেছে এর বিচিত্রতা, আচার অনুষ্ঠান, উদারতা, আড়ম্বরতা, সর্বপ্রাণবাদ, মানবতা ও সৃজনশীলতার জন্য। মায়ের আগমনী গানে এখন শুধু দুই বাংলা নয় পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তেই মেতে উঠছে সবাই। দুর্গা পূজা এমন একটি অনুষ্ঠান যা একাধারে পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিকতার এক মহামিলনের মহোৎসব। দুর্গার আগমন মানেই অশুভ শক্তির বিনাশ, অন্যায়, অসত্য, বিরোধ, বিভেদ থেকে পরিত্রাণ আর তিনি সবাইকে দেন সত্য, ন্যায়, ঐক্য, কল্যাণ ও আত্মীক সূচিতা অর্জনের চিরন্তন পথের দিশা। দুর্গা পূজা নিয়ে আসে প্রতিটি সনাতনী পরিবারে খুশীর বন্যা, আনন্দের উচ্ছাস, আনন্দে উদ্বেলিত হয় প্রতিটি পরিবার  কিন্তু এবারের পূজা একটু ব্যতিক্রম বিশেষ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতনীদের উপর হামলা, মামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও মন্দির ভাঙচুর মানুষকে করে তুলেছে আতঙ্কগ্রস্থ ( ৫ – ২০ আগষ্ট : হামলার শিকার সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৬৮, প্রথম আলো, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ অন লাইন সংস্করণ) । এই অবস্থায় কেউ কেউ বলছেন প্রতীকী পূজা বা ঘটপূজা করার কথা, কেউবা বলছেন পূজার আড়ম্বর কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন কথা, আমি ব্যক্তিগতভাবে এসবের পক্ষে নই। আমার কথা হচ্ছে দুর্গা পূজা সনাতনী বাঙ্গালিদের প্রধান উৎসব, প্রাণের উৎসব, কাঙ্খিত দুর্গা পূজা এখন দ্বারপ্রান্তে এই উৎসবের জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি, আমাদের মধ্যে একটা ব্যাকুলতা কাজ করে। বিজয়া দশমীর পর থেকেই শুরু হয় ক্ষণ গণনা কিভাবে আগামী পূজা হবে আরো সুন্দর, আরো আনন্দঘন, আরো বর্ণিল। আর এই বর্ণিল আনন্দ দেখার জন্য দুর্গা আসছেন বাপের বাড়ী। বিয়ে হয়ে যাওয়া বধূরূপী মেয়েটি বাপের বাড়ী ফিরে আসার মূহূর্তটি বাঙালি সমাজ মানষে এক আবহমান আমেজ সৃষ্টি করে। এতে বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে যে সর্বপ্রাণবাদ, নারী বা মাতৃচরিত্রের প্রতি যে শ্রদ্ধা বা ভালবাসা ফুটে উঠেছে তা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে স্পর্শ করে।

দুর্গা পূজায় অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা বিশেষ করে মূর্তি ভাঙা, মন্ডপ ভাঙা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, পূজা পন্ড করে দেয়ার প্রতিরোধে পূজা কমিটিকে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

১. প্রতিমা যেখানে তৈরী করা হয় সে জায়গায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, বিশেষ করে খোলা জায়গায় প্রতিমা না বানিয়ে একটা বড় কোন ঘরে বা আলং তৈরী করে চারিদিক বন্ধ করে প্রতিমা তৈরী করা।

২. প্রতিটি পূজা কমিটির সাথে ৫০ বা ততোধিক পরিবার সংশ্লিষ্ট থাকেন, পূজার তিন দিন পালাক্রমে সবাই মিলে পাহারার ব্যবস্থা করা।

৩. প্রতিটি পূজা শেষ হতে রাত প্রায় ১২টা, ১টা বেজে যায়, এ সময় পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা থাকে এর পরের ৪/৫ ঘন্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

৪. যারা গভীর রাতে মূর্তি ভাঙতে আসে তারা কিন্তু দল বেধে আসে না, এক বা একাধিক ব্যক্তি আসে। তারা চোরা গুপ্তা হামলা বা ভাংচুর করে পালিয়ে যায়। এরা মূলত কারো আদেশ পালন করতে বা টাকার বিনিময়ে বা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এ কাজ করতে আসে। যা বিভিন্ন সময়ে সিসি টিভির ফুটেজ থেকে দেখা গেছে। এরা যখন দেখবে দলবদ্ধভাবে পূজা মন্ডপ বা প্যান্ডেল পাহারা দেয়া হচ্ছে তখন তারা এ কাজে আসবে না।

৫. এখন সিকিউরিটির জন্য বিভিন্ন কোম্পানী রয়েছে যারা অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে থাকে। আর্থিক অবস্থা ভাল থাকলে এদের ভাড়া করা যেতে পারে।

৬. পূজা কমিটির সদস্যদের হোয়াটস আপ গ্রুপ, মেসেঞ্জার গ্রুপ  তৈরী করা যাতে তথ্যের আদান প্রদান, জরুরি খবর, দুর্ঘটনাসহ যে কোন বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়।

৭. পূজা মন্ডপে কোন অপরিচিত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের সন্দেহজনক চলাফেরা দেখামাত্র ব্যবস্থা নেয়া।

৮. স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, পাড়া, প্রতিবেশীদের সাথে পূজার ব্যাপারে যোগাযোগ ও মত বিনিময় করা।

৯. পূজা মন্ডপের পুরো এলাকা সিসি টিভির ব্যবস্থা করা।

১০. পূজা কমিটির প্রতিটি সদস্যকে অধিক দায়িত্বশীল এবং প্রতিটি বিষয় নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১১. যে কোন বিষয় নিয়ে কারো সাথে ভূল বুঝাবুঝি হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা শেষ করতে হবে।

১২. পূজা মন্ডপে কোন রাজনৈতিক আলাপ, কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে।

১৩. পূজা মন্ডপে কোন সৌজন্য বক্তব্য, ভাষণ পরিতাজ্য তবে পূজা, ধর্ম বিষয়ক আলোচনা হতে পারে।

১৪. পূজা মন্ডপের বাইরে দলবদ্ধভাবে অপরিচিত কেউ সন্দেহ জনকভাবে ঘুরাফিরা করলে তাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

১৫. পূজায় তামষিকতার পরিবর্তে আধ্যাত্মিকতা ও সাত্যিকতার উপর জোর দেয়া।

১৬. আরতি প্রতিযোগিতার নামে অশ্লীল নাচ, অঙ্গভঙ্গি পরিতাজ্য।

১৭. মাইকে উচ্চস্বরে হিন্দী গান, ডিজে বন্ধ করে পূজার গান, ভক্তিমূলক গান, কীর্তন প্রচার করুন।

১৮. শিশু কিশোরদের মধ্যে আরতি প্রতিযোগিতা, ধর্মালোচনা, গীতাপাঠের প্রতিযোগিতা করুন।

১৯. ব্যয়বহুল আলোকসজ্জা ও মন্ডপে বা প্যান্ডেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ না করে দরিদ্র নারায়ণের প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থা রাখুন।

২০. বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দেখা যায় রাত বাড়ার সাথে সাথে এক শ্রেণীর উশৃঙ্খল  তরুণ নেশা করে মাতলামি করে পূজার পরিবেশ নষ্ট করে এরা যেই হোক এদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। পূজা মন্ডপে এবং এর আশপাশ এলাকায় ধূমপান ও মদ্যপান নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা এসব মাদক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করবে তাদেরে মন্ডপ এলাকায় প্রবেশ নিষেধ করতে হবে।

এবারের পূজা হয়ে ওঠুক আরো সুন্দর, আরো বর্ণিল, মানুষের মধ্যে জাগ্রত হোক মঙ্গলবোধ, কল্যাণ, ঐক্য, মনুষত্ববোধ, ইতিবাচক চেতনা। দুর্গোৎসবে আমরা শুদ্ধতার সন্ধ্যান পাই, চলুন আমরা সবাই শুদ্ধতায়, শুভ্রতায় স্নাত হই।

প্রতিটি গৃহকোণ হয়ে উঠুক উৎসবময়, শারদময়। সবাইকে আসন্ন দুর্গোৎসবের আগাম শারদ শুভেচ্ছা।

 

পার্থ সারথী দেব,

লেখক, সাংস্কৃতিক সংগঠক,

সহ সভাপতি বাংলা প্রেস ক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ

মিডিয়া ও পাবলিকেশান ডাইরেক্টর

দুর্গা টেম্পল, ডেট্রয়েট

মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Tag :
About Author Information

মতামত

দুর্গা পূজায় অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিন

আপডেট টাইম : ০৯:৫৬:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বর্ষ পরিক্রমায় আবারো ফিরে এসেছে শারদীয় দুর্গোৎসব। দুর্গোৎসব এখন শুধু সনাতন বাঙ্গালির উৎসব নয় সেটা এখন সর্বজনীনতা ও বিশ্বজনীনতা অর্জন করেছে এর বিচিত্রতা, আচার অনুষ্ঠান, উদারতা, আড়ম্বরতা, সর্বপ্রাণবাদ, মানবতা ও সৃজনশীলতার জন্য। মায়ের আগমনী গানে এখন শুধু দুই বাংলা নয় পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তেই মেতে উঠছে সবাই। দুর্গা পূজা এমন একটি অনুষ্ঠান যা একাধারে পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিকতার এক মহামিলনের মহোৎসব। দুর্গার আগমন মানেই অশুভ শক্তির বিনাশ, অন্যায়, অসত্য, বিরোধ, বিভেদ থেকে পরিত্রাণ আর তিনি সবাইকে দেন সত্য, ন্যায়, ঐক্য, কল্যাণ ও আত্মীক সূচিতা অর্জনের চিরন্তন পথের দিশা। দুর্গা পূজা নিয়ে আসে প্রতিটি সনাতনী পরিবারে খুশীর বন্যা, আনন্দের উচ্ছাস, আনন্দে উদ্বেলিত হয় প্রতিটি পরিবার  কিন্তু এবারের পূজা একটু ব্যতিক্রম বিশেষ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতনীদের উপর হামলা, মামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও মন্দির ভাঙচুর মানুষকে করে তুলেছে আতঙ্কগ্রস্থ ( ৫ – ২০ আগষ্ট : হামলার শিকার সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৬৮, প্রথম আলো, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ অন লাইন সংস্করণ) । এই অবস্থায় কেউ কেউ বলছেন প্রতীকী পূজা বা ঘটপূজা করার কথা, কেউবা বলছেন পূজার আড়ম্বর কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন কথা, আমি ব্যক্তিগতভাবে এসবের পক্ষে নই। আমার কথা হচ্ছে দুর্গা পূজা সনাতনী বাঙ্গালিদের প্রধান উৎসব, প্রাণের উৎসব, কাঙ্খিত দুর্গা পূজা এখন দ্বারপ্রান্তে এই উৎসবের জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি, আমাদের মধ্যে একটা ব্যাকুলতা কাজ করে। বিজয়া দশমীর পর থেকেই শুরু হয় ক্ষণ গণনা কিভাবে আগামী পূজা হবে আরো সুন্দর, আরো আনন্দঘন, আরো বর্ণিল। আর এই বর্ণিল আনন্দ দেখার জন্য দুর্গা আসছেন বাপের বাড়ী। বিয়ে হয়ে যাওয়া বধূরূপী মেয়েটি বাপের বাড়ী ফিরে আসার মূহূর্তটি বাঙালি সমাজ মানষে এক আবহমান আমেজ সৃষ্টি করে। এতে বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে যে সর্বপ্রাণবাদ, নারী বা মাতৃচরিত্রের প্রতি যে শ্রদ্ধা বা ভালবাসা ফুটে উঠেছে তা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে স্পর্শ করে।

দুর্গা পূজায় অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা বিশেষ করে মূর্তি ভাঙা, মন্ডপ ভাঙা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, পূজা পন্ড করে দেয়ার প্রতিরোধে পূজা কমিটিকে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

১. প্রতিমা যেখানে তৈরী করা হয় সে জায়গায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, বিশেষ করে খোলা জায়গায় প্রতিমা না বানিয়ে একটা বড় কোন ঘরে বা আলং তৈরী করে চারিদিক বন্ধ করে প্রতিমা তৈরী করা।

২. প্রতিটি পূজা কমিটির সাথে ৫০ বা ততোধিক পরিবার সংশ্লিষ্ট থাকেন, পূজার তিন দিন পালাক্রমে সবাই মিলে পাহারার ব্যবস্থা করা।

৩. প্রতিটি পূজা শেষ হতে রাত প্রায় ১২টা, ১টা বেজে যায়, এ সময় পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা থাকে এর পরের ৪/৫ ঘন্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

৪. যারা গভীর রাতে মূর্তি ভাঙতে আসে তারা কিন্তু দল বেধে আসে না, এক বা একাধিক ব্যক্তি আসে। তারা চোরা গুপ্তা হামলা বা ভাংচুর করে পালিয়ে যায়। এরা মূলত কারো আদেশ পালন করতে বা টাকার বিনিময়ে বা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এ কাজ করতে আসে। যা বিভিন্ন সময়ে সিসি টিভির ফুটেজ থেকে দেখা গেছে। এরা যখন দেখবে দলবদ্ধভাবে পূজা মন্ডপ বা প্যান্ডেল পাহারা দেয়া হচ্ছে তখন তারা এ কাজে আসবে না।

৫. এখন সিকিউরিটির জন্য বিভিন্ন কোম্পানী রয়েছে যারা অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে থাকে। আর্থিক অবস্থা ভাল থাকলে এদের ভাড়া করা যেতে পারে।

৬. পূজা কমিটির সদস্যদের হোয়াটস আপ গ্রুপ, মেসেঞ্জার গ্রুপ  তৈরী করা যাতে তথ্যের আদান প্রদান, জরুরি খবর, দুর্ঘটনাসহ যে কোন বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়।

৭. পূজা মন্ডপে কোন অপরিচিত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের সন্দেহজনক চলাফেরা দেখামাত্র ব্যবস্থা নেয়া।

৮. স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, পাড়া, প্রতিবেশীদের সাথে পূজার ব্যাপারে যোগাযোগ ও মত বিনিময় করা।

৯. পূজা মন্ডপের পুরো এলাকা সিসি টিভির ব্যবস্থা করা।

১০. পূজা কমিটির প্রতিটি সদস্যকে অধিক দায়িত্বশীল এবং প্রতিটি বিষয় নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১১. যে কোন বিষয় নিয়ে কারো সাথে ভূল বুঝাবুঝি হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা শেষ করতে হবে।

১২. পূজা মন্ডপে কোন রাজনৈতিক আলাপ, কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে।

১৩. পূজা মন্ডপে কোন সৌজন্য বক্তব্য, ভাষণ পরিতাজ্য তবে পূজা, ধর্ম বিষয়ক আলোচনা হতে পারে।

১৪. পূজা মন্ডপের বাইরে দলবদ্ধভাবে অপরিচিত কেউ সন্দেহ জনকভাবে ঘুরাফিরা করলে তাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

১৫. পূজায় তামষিকতার পরিবর্তে আধ্যাত্মিকতা ও সাত্যিকতার উপর জোর দেয়া।

১৬. আরতি প্রতিযোগিতার নামে অশ্লীল নাচ, অঙ্গভঙ্গি পরিতাজ্য।

১৭. মাইকে উচ্চস্বরে হিন্দী গান, ডিজে বন্ধ করে পূজার গান, ভক্তিমূলক গান, কীর্তন প্রচার করুন।

১৮. শিশু কিশোরদের মধ্যে আরতি প্রতিযোগিতা, ধর্মালোচনা, গীতাপাঠের প্রতিযোগিতা করুন।

১৯. ব্যয়বহুল আলোকসজ্জা ও মন্ডপে বা প্যান্ডেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ না করে দরিদ্র নারায়ণের প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থা রাখুন।

২০. বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দেখা যায় রাত বাড়ার সাথে সাথে এক শ্রেণীর উশৃঙ্খল  তরুণ নেশা করে মাতলামি করে পূজার পরিবেশ নষ্ট করে এরা যেই হোক এদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। পূজা মন্ডপে এবং এর আশপাশ এলাকায় ধূমপান ও মদ্যপান নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা এসব মাদক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করবে তাদেরে মন্ডপ এলাকায় প্রবেশ নিষেধ করতে হবে।

এবারের পূজা হয়ে ওঠুক আরো সুন্দর, আরো বর্ণিল, মানুষের মধ্যে জাগ্রত হোক মঙ্গলবোধ, কল্যাণ, ঐক্য, মনুষত্ববোধ, ইতিবাচক চেতনা। দুর্গোৎসবে আমরা শুদ্ধতার সন্ধ্যান পাই, চলুন আমরা সবাই শুদ্ধতায়, শুভ্রতায় স্নাত হই।

প্রতিটি গৃহকোণ হয়ে উঠুক উৎসবময়, শারদময়। সবাইকে আসন্ন দুর্গোৎসবের আগাম শারদ শুভেচ্ছা।

 

পার্থ সারথী দেব,

লেখক, সাংস্কৃতিক সংগঠক,

সহ সভাপতি বাংলা প্রেস ক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ

মিডিয়া ও পাবলিকেশান ডাইরেক্টর

দুর্গা টেম্পল, ডেট্রয়েট

মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।