মিশিগানের ডেট্রয়েট দুর্গা মন্দিরে এই প্রথমবারের মতো অন্নকূট পূজা অনুষ্টিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, আগামী ১৯ নভেম্বর, রোববার মন্দিরে অন্নকূট পূজার আয়োজন করা হয়েছে। পূজা শুরু হবে বেলা ১১টায়, ভোগ বেলা ১২টায়। মন্দিরের কমিটি উক্ত অনুষ্টানে সবাইকে নিয়ে উপস্থিত হয়ে মাঙ্গলিক ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে আনন্দ উপভোগ ও প্রসাদ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। তারা জানান, যে কোন প্রকার অনুদান সাদরে গ্রহণ করা হবে। মন্দিরের প্রেসিডেন্ট পংকজ দাশ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নিপেশ সুত্রধর জানান, কয়েকজন ভক্ত মন্দিরে অন্নকূট পূজা করার প্রস্তাব করেন, কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে অন্নকূট পূজা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যেহেতু এ পূজা এই প্রথম অনুষ্টিত হচ্ছে তাই ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল ও সাড়া পড়েছে। অন্নকূট পূজার ব্যাপারে মন্দিরের মিডিয়া ও পাবলিকেশান ডাইরেক্টর ও বাংলা প্রেস ক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ এর সহ সভাপতি
পার্থ সারথী দেব এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গোবর্ধন পূজা অন্নকূট নামে পরিচিত। সনাতন ক্যালেন্ডার অনুসারে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে গোবর্ধন পূজা করা হয়। অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই উৎসব পালিত হয়। ভক্তরা গোবর্ধন গিরির উপাসনা করেন এবং কৃতজ্ঞতার চিহ্ন হিসেবে কৃষ্ণকে বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ খাবার প্রস্তুত করেন এবং অর্পণ করেন। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, বৃষ্টি যেন ভাল হয়, সে জন্য বৃন্দাবনের লোকেরা জাঁকজমক করে ইন্দ্রের পুজো করতেন। তা পছন্দ হয়নি কৃষ্ণের, তিনি উপদেশ দেন, ইন্দ্রের পুজোয় যে খাবার ইত্যাদি দেওয়া হয়, তা বাচ্চাদের দিয়ে দেওয়া হোক। শ্রীকৃষ্ণের কথা ফেলতে পারেননি বাসিন্দারা। তাতে ক্ষুব্ধ হন দেবরাজ। শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি, ইন্দ্রের ক্রোধের কারণেই। তখন গ্রামবাসীকে বাঁচানোর জন্য নিজের লীলা দেখান কৃষ্ণ। সেই সময় গ্রামবাসীরা যে খাবার নিয়ে গিয়েছিল তাই-ই খাওয়া হয় ভাগাভাগি করে। যা খুব ভাল লাগে শ্রীকৃষ্ণের। তারপর থেকেই শুরু হয় ‘অন্নকূট’ পুজো। অন্ন, মানে ভাত। কূটের অর্থ, পাহাড়। বিপদের সময়, ওই বৃষ্টিকালীন অবস্থায় গ্রামবাসী ও কৃষ্ণ যে খাবার ভাগ করে খান, তার আকার ছিল পাহাড়ের মতো! সেই থেকেই নাম, এই ‘অন্নকূট’।