০৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
নির্বাচন ২০২৪

ট্রাম্পের কেবিনেটে ইসরায়েলপন্থীদের মনোনয়নে মুসলিম ভোটাররা হতাশ

গাজায় যুদ্ধে ইসরায়েলকে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের জন্য গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকায় বসবাসরত অনেক মুসলিম ভোটার ট্রাম্পকে সমর্থন ও ভোট দিয়েছিলেন কিন্তু ট্রাম্পের কেবিনেটে ইসরায়েলপন্থীদের বাছাই করায় তাদের হতাশ করেছে। রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক পোষ্ট, দি টাইমস অব ইসরায়েল, দি ইকোনমিক টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস এর সংবাদ অবলম্বনে। ফিলাডেলফিয়ার একজন মুসলিম বিনিয়োগকারী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ট্রাম্প আমাদের জন্য জিতেছেন, কিন্তু তার সেক্রেটারি অব স্টেট নির্বাচন (বাছাই) আমাদের হতাশ করেছে।” নির্বাচন বিশ্লেষক ও কৌশলবিদরা বিশ্বাস করেন মুসলিম ভোটাররা মিশিগানে ট্রাম্পকে জিততে সাহায্য করেছেন এবং অন্যান্য দোদল্যমান অঙ্গরাজ্যেও জয়ের কারণ হতে পারে। ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিওকে সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। বছরের শুরুতে রুবিও বলেছিলেন, তিনি গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহবান জানাবেন না, তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলকে ‘দুষ্ট প্রাণী’ হামাসের প্রতিটি উপাদান ধ্বংস করা উচিৎ। ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থী রক্ষণশীল মাইক হাকাবিকে ইসরায়েলে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে মনোনীত করেছেন। হাকাবি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের একজন শক্তিশালী সমর্থক এবং ফিলিস্তিনে দুই রাষ্ট্রীয় সমাধানকে “অকার্যকর” বলে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইসরায়েলপন্থী আরেকজন এলিস স্টেফানিকে বাছাই করা হয়েছে। আমেরিকান মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট নেটওয়ার্ক (এএমইইএন) এর নির্বাহী পরিচালক রেক্সিনাল্ডো নাজারকো বলেছেন, মুসলিম ভোটাররা আশা করেছিলেন ট্রাম্প মন্ত্রি পরিষদে সেই সব কর্মকর্তাদের বেছে নেবেন যারা শান্তির জন্য কাজ করবেন কিন্তু এ পর্যন্ত এর কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময়, ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহৎ আরব আমেরিকান এবং মুসলিম জনসংখ্যার শহরগুলিতে বেশ কয়েকবার সফর করেছিলেন, বলেছিলেন যে তিনি মুসলমানদের ভালোবাসেন। মিশিগান রিপাবলিকান পার্টির আউটরিচের মুসলিম ভাইস চেয়ার লেবানিজ-আমেরিকান রোলা মাক্কি বলেছেন  “আমি মনে করি না যে ট্রাম্পের প্রতিটি অ্যাপয়েন্টমেন্টে  সবাই খুশি হবেন, তবে তার ফলাফল  গুরুত্বপূর্ণ।”   ট্রাম্পের বেশ কিছু মুসলিম ও আরব সমর্থক বলেছেন যে তারা আশা করেছিলেন যে ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রিচার্ড গ্রেনেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন, তিনি কয়েক মাস ধরে মুসলিম ও আরব আমেরিকান সম্প্রদায়ের কাছে প্রচারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী, ট্রাম্পের মেয়ে টিফানির লেবানীজ শ্বশুর মাসাদ বুলোস, আরব আমেরিকান ও মুসলিম নেতাদের সাথে বারবার দেখা করেছেন। উভয়েই আরব আমেরিকান এবং মুসলিম ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ট্রাম্প শান্তির প্রার্থী যিনি মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কাজ করবেন। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বৃহৎ আরব আমেরিকান এবং মুসলিম জনসংখ্যার শহরগুলিতে বেশ কয়েকবার সফর করেছেন, যার মধ্যে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ  শহর ডিয়ারবর্ন যেখানে তিনি বলেছিলেন যে তিনি মুসলমানদের ভালবাসেন অন্যদিকে তিনি  পিটসবার্গে বলেছেন মুসলমানরা শান্তি চায়, তারা স্থিতিশীলতা চায়। মিশিগানের  ডিয়ারবর্ন হাইটসের মেয়র বিল বাজি, যিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন, বলেছেন যে তিনি তিনবার নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছেন এবং এখনও বিশ্বাস করেন যে তিনি কেবিনেটে বিভিন্ন মতের লোক নেয়া সত্ত্বেও যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাজ করবেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা মনে করেন ট্রাম্প  রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের গণহত্যা বন্ধ করবেন, গত টার্মে যখন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন সারা বিশ্বে কোন যুদ্ধ ছিল না, যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন। সে সময় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ভাল, কাজকর্মের সংস্থান ছিল, বর্ডার সিকুউয়র্ড ছিল, অবৈধ অভিবাসী আগমন সর্ব নিম্ন পর্যায়ে ছিল, দেশের বেকারের সংখ্যা ন্যূনতম ছিল। সেই আশাতেই আমেরিকানরাসহ সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম ক্ষমতায় বসে কি করেন। কি দিক নির্দেশনা দেন। তার সঠিক নির্দেশনা কি যুদ্ধ বিগ্রহ থামিয়ে, অর্থনীতি চাঙ্গা করে সারা বিশ্বে বইবে শান্তির বারতা। নতুন বছরের ২০ জানুয়ারী সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম শুরু করবেন এক নতুন যাত্রা। সেই যাত্রা পথে তিনি কি কি পালক সংযোজন করেন তা প্রত্যক্ষ করার জন্য সারা বিশ্বের মানুষ কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে।

Tag :
About Author Information

মিশিগানে সনাতনীদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন

নির্বাচন ২০২৪

ট্রাম্পের কেবিনেটে ইসরায়েলপন্থীদের মনোনয়নে মুসলিম ভোটাররা হতাশ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

গাজায় যুদ্ধে ইসরায়েলকে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের জন্য গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকায় বসবাসরত অনেক মুসলিম ভোটার ট্রাম্পকে সমর্থন ও ভোট দিয়েছিলেন কিন্তু ট্রাম্পের কেবিনেটে ইসরায়েলপন্থীদের বাছাই করায় তাদের হতাশ করেছে। রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক পোষ্ট, দি টাইমস অব ইসরায়েল, দি ইকোনমিক টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস এর সংবাদ অবলম্বনে। ফিলাডেলফিয়ার একজন মুসলিম বিনিয়োগকারী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ট্রাম্প আমাদের জন্য জিতেছেন, কিন্তু তার সেক্রেটারি অব স্টেট নির্বাচন (বাছাই) আমাদের হতাশ করেছে।” নির্বাচন বিশ্লেষক ও কৌশলবিদরা বিশ্বাস করেন মুসলিম ভোটাররা মিশিগানে ট্রাম্পকে জিততে সাহায্য করেছেন এবং অন্যান্য দোদল্যমান অঙ্গরাজ্যেও জয়ের কারণ হতে পারে। ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিওকে সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। বছরের শুরুতে রুবিও বলেছিলেন, তিনি গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহবান জানাবেন না, তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলকে ‘দুষ্ট প্রাণী’ হামাসের প্রতিটি উপাদান ধ্বংস করা উচিৎ। ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থী রক্ষণশীল মাইক হাকাবিকে ইসরায়েলে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে মনোনীত করেছেন। হাকাবি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের একজন শক্তিশালী সমর্থক এবং ফিলিস্তিনে দুই রাষ্ট্রীয় সমাধানকে “অকার্যকর” বলে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইসরায়েলপন্থী আরেকজন এলিস স্টেফানিকে বাছাই করা হয়েছে। আমেরিকান মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট নেটওয়ার্ক (এএমইইএন) এর নির্বাহী পরিচালক রেক্সিনাল্ডো নাজারকো বলেছেন, মুসলিম ভোটাররা আশা করেছিলেন ট্রাম্প মন্ত্রি পরিষদে সেই সব কর্মকর্তাদের বেছে নেবেন যারা শান্তির জন্য কাজ করবেন কিন্তু এ পর্যন্ত এর কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময়, ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহৎ আরব আমেরিকান এবং মুসলিম জনসংখ্যার শহরগুলিতে বেশ কয়েকবার সফর করেছিলেন, বলেছিলেন যে তিনি মুসলমানদের ভালোবাসেন। মিশিগান রিপাবলিকান পার্টির আউটরিচের মুসলিম ভাইস চেয়ার লেবানিজ-আমেরিকান রোলা মাক্কি বলেছেন  “আমি মনে করি না যে ট্রাম্পের প্রতিটি অ্যাপয়েন্টমেন্টে  সবাই খুশি হবেন, তবে তার ফলাফল  গুরুত্বপূর্ণ।”   ট্রাম্পের বেশ কিছু মুসলিম ও আরব সমর্থক বলেছেন যে তারা আশা করেছিলেন যে ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রিচার্ড গ্রেনেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন, তিনি কয়েক মাস ধরে মুসলিম ও আরব আমেরিকান সম্প্রদায়ের কাছে প্রচারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী, ট্রাম্পের মেয়ে টিফানির লেবানীজ শ্বশুর মাসাদ বুলোস, আরব আমেরিকান ও মুসলিম নেতাদের সাথে বারবার দেখা করেছেন। উভয়েই আরব আমেরিকান এবং মুসলিম ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ট্রাম্প শান্তির প্রার্থী যিনি মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কাজ করবেন। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বৃহৎ আরব আমেরিকান এবং মুসলিম জনসংখ্যার শহরগুলিতে বেশ কয়েকবার সফর করেছেন, যার মধ্যে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ  শহর ডিয়ারবর্ন যেখানে তিনি বলেছিলেন যে তিনি মুসলমানদের ভালবাসেন অন্যদিকে তিনি  পিটসবার্গে বলেছেন মুসলমানরা শান্তি চায়, তারা স্থিতিশীলতা চায়। মিশিগানের  ডিয়ারবর্ন হাইটসের মেয়র বিল বাজি, যিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন, বলেছেন যে তিনি তিনবার নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছেন এবং এখনও বিশ্বাস করেন যে তিনি কেবিনেটে বিভিন্ন মতের লোক নেয়া সত্ত্বেও যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কাজ করবেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা মনে করেন ট্রাম্প  রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের গণহত্যা বন্ধ করবেন, গত টার্মে যখন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন সারা বিশ্বে কোন যুদ্ধ ছিল না, যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন। সে সময় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ভাল, কাজকর্মের সংস্থান ছিল, বর্ডার সিকুউয়র্ড ছিল, অবৈধ অভিবাসী আগমন সর্ব নিম্ন পর্যায়ে ছিল, দেশের বেকারের সংখ্যা ন্যূনতম ছিল। সেই আশাতেই আমেরিকানরাসহ সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম ক্ষমতায় বসে কি করেন। কি দিক নির্দেশনা দেন। তার সঠিক নির্দেশনা কি যুদ্ধ বিগ্রহ থামিয়ে, অর্থনীতি চাঙ্গা করে সারা বিশ্বে বইবে শান্তির বারতা। নতুন বছরের ২০ জানুয়ারী সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম শুরু করবেন এক নতুন যাত্রা। সেই যাত্রা পথে তিনি কি কি পালক সংযোজন করেন তা প্রত্যক্ষ করার জন্য সারা বিশ্বের মানুষ কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে।