০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
স্থানীয় সংবাদ

হিন্দুদের উপর হামলা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধের দাবীতে মিশিগানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে গত ১১ আগষ্ট রোববার বিকেলে হিন্দু কমিউনিটি অব মিশিগানের উদ্যোগে বাংলাদেশে সনাতনীদের উপর হামলা ও নির্যাতন, হামলাকারীদের গ্রেফতার, বিচার ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ক্ষতি পূরণ দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ ও এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। এতে বিপুল সংখ্যক নারী, শিশু, কিশোর, তরুণ, তরুণীরা যোগ দেন। সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড, ফ্যাষ্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন ও

মিশিগানের ওয়ারেন সিটির কালীবাড়ীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : সংগৃহিত

প্রদর্শন করেন, তারা বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এ সময় পথচারিরা হাত নাড়িয়ে তাদেরে সমর্থন জানান, কোন কোন গাড়ী চালক হর্ণ বাজিয়ে প্রতিবাদকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা যায় । সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিবার সরকার পরিবর্তন হয় আর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ হামলা নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, আমরা চাই, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ।’ এক দিকে গান অন্যদিকে বক্তব্য, সেই বক্তব্য  ছাপিয়ে সমাবেশে কেবল শোনা যাচ্ছিল নানা স্লোগান আর স্লোগান। ‘জেগেছে জেগেছে সনাতনী জেগেছে’, ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘স্বাধীন দেশে হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই’ ‘বিচার চাই বিচার চাই, হামলাকারীর বিচার চাই’ আমরা কারা আমরা কারা,

বাঙালি বাঙালি ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে সমাবেশস্থল। উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তারাও প্রতিবাদকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন ও বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হ্যামট্রাম্যাক সিটির সাবেক মেয়র ক্যারন মাজেস্কি, তিনি সমবেত সনাতনীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।  অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দুর্গা টেম্পলের প্রেসিডেন্ট পংকজ দাশ।

এছাড়াও ওয়ারেন সিটির কালীবাড়ীতে গত ১১ আগষ্ট রোববার বিকেলে বাংলাদেশে সনাতনীদের উপর হামলা ও নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর, লুটপাটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ মিশিগান (বাম) এর সহ-সভাপতি ও সিম্ফনি ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট কমুউনিটি নেতা বিজিত ধর মনি এ ব্যাপারে আলাপকালে জানান, “১৯৪৭ সালে বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সংখ্যা লঘুরা সাম্প্রদায়িকতা ও সহিংসতার স্বীকার, ১৯৭১ সালে তাদের উপর নেমে আসে বিভিষিকা, প্রাণের ভয়ে এক কোটি মানুষ আশ্রয় নেয় ভারতে।১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর আবারো নেমে অমানিষা, ‘৯০ এ স্বৈরাচারী এরশাদ আন্দোলনের মুখে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়, ২০০১ সালে আবারো সারা দেশে বিভৎস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই আমরা আবারো প্রত্যক্ষ করলাম সংখ্যালঘুদের উপর সারা দেশব্যাপী হামলা, নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর,

মিশিগানের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : পার্থ দেব

লুটপাটসহ সহিংসতা। কেন বারবার  সংখ্যালঘুদের উপর এ আক্রমণ। তবে এবার একটি বিষয় লক্ষণীয় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘুরা এসবের প্রতিবাদ, মিছিল করছেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিশিষ্ট কমুউনিটি নেতা অধ্যাপক অরবিন্দ মৃদুল চৌধুরী বলেন, “কেন বারবার হিন্দু ও সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হবেন, এসব হামলা, নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর, লুটপাটসহ সহিংসতার বিচার চাই।” বাংলা প্রেস ক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ’র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক, গবেষক পার্থ সারথী দেব বলেন, “আপনারা হয়ত পূর্ণিমার কথা ভূলে গেছেন, ভূলে গেছেন নূর হোসেনের কথা, গোপাল কৃষ্ণ মুহুরির কথা, নিদারাবাদের বিরজাবালার কথা। আসলে বাঙালি বিস্মৃতি

মিশিগানের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : পার্থ দেব

পরায়ন এক জাতি। প্রতিটি আন্দোলন, প্রতিটি নির্বাচনের পরই বিভিষিকা নেমে আসে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর। যে দলই জয়ী হোক না কেন পরাজিত দলের মূল টার্গেট হলো সংখ্যালঘুরা। গত ১০ বছর প্রকৃত অর্থে দেশে কোন নির্বাচন ছিল না এরপরও সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা থেমে থাকেনি, চাই প্রতিরোধ, প্রতিবাদ, এবার অবশ্য সংখ্যালঘুরা ঘুরে দাড়িয়েছেন।

 

Tag :
About Author Information

স্থানীয় সংবাদ

হিন্দুদের উপর হামলা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধের দাবীতে মিশিগানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ

আপডেট টাইম : ০১:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে গত ১১ আগষ্ট রোববার বিকেলে হিন্দু কমিউনিটি অব মিশিগানের উদ্যোগে বাংলাদেশে সনাতনীদের উপর হামলা ও নির্যাতন, হামলাকারীদের গ্রেফতার, বিচার ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ক্ষতি পূরণ দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ ও এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। এতে বিপুল সংখ্যক নারী, শিশু, কিশোর, তরুণ, তরুণীরা যোগ দেন। সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড, ফ্যাষ্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন ও

মিশিগানের ওয়ারেন সিটির কালীবাড়ীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : সংগৃহিত

প্রদর্শন করেন, তারা বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এ সময় পথচারিরা হাত নাড়িয়ে তাদেরে সমর্থন জানান, কোন কোন গাড়ী চালক হর্ণ বাজিয়ে প্রতিবাদকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা যায় । সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিবার সরকার পরিবর্তন হয় আর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ হামলা নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, আমরা চাই, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ।’ এক দিকে গান অন্যদিকে বক্তব্য, সেই বক্তব্য  ছাপিয়ে সমাবেশে কেবল শোনা যাচ্ছিল নানা স্লোগান আর স্লোগান। ‘জেগেছে জেগেছে সনাতনী জেগেছে’, ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘স্বাধীন দেশে হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই’ ‘বিচার চাই বিচার চাই, হামলাকারীর বিচার চাই’ আমরা কারা আমরা কারা,

বাঙালি বাঙালি ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে সমাবেশস্থল। উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তারাও প্রতিবাদকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন ও বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হ্যামট্রাম্যাক সিটির সাবেক মেয়র ক্যারন মাজেস্কি, তিনি সমবেত সনাতনীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।  অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দুর্গা টেম্পলের প্রেসিডেন্ট পংকজ দাশ।

এছাড়াও ওয়ারেন সিটির কালীবাড়ীতে গত ১১ আগষ্ট রোববার বিকেলে বাংলাদেশে সনাতনীদের উপর হামলা ও নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর, লুটপাটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ মিশিগান (বাম) এর সহ-সভাপতি ও সিম্ফনি ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট কমুউনিটি নেতা বিজিত ধর মনি এ ব্যাপারে আলাপকালে জানান, “১৯৪৭ সালে বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সংখ্যা লঘুরা সাম্প্রদায়িকতা ও সহিংসতার স্বীকার, ১৯৭১ সালে তাদের উপর নেমে আসে বিভিষিকা, প্রাণের ভয়ে এক কোটি মানুষ আশ্রয় নেয় ভারতে।১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর আবারো নেমে অমানিষা, ‘৯০ এ স্বৈরাচারী এরশাদ আন্দোলনের মুখে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়, ২০০১ সালে আবারো সারা দেশে বিভৎস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই আমরা আবারো প্রত্যক্ষ করলাম সংখ্যালঘুদের উপর সারা দেশব্যাপী হামলা, নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর,

মিশিগানের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : পার্থ দেব

লুটপাটসহ সহিংসতা। কেন বারবার  সংখ্যালঘুদের উপর এ আক্রমণ। তবে এবার একটি বিষয় লক্ষণীয় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘুরা এসবের প্রতিবাদ, মিছিল করছেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিশিষ্ট কমুউনিটি নেতা অধ্যাপক অরবিন্দ মৃদুল চৌধুরী বলেন, “কেন বারবার হিন্দু ও সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হবেন, এসব হামলা, নির্যাতন, মন্দির ভাঙ্গচুর, লুটপাটসহ সহিংসতার বিচার চাই।” বাংলা প্রেস ক্লাব অব মিশিগান ইউএসএ’র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক, গবেষক পার্থ সারথী দেব বলেন, “আপনারা হয়ত পূর্ণিমার কথা ভূলে গেছেন, ভূলে গেছেন নূর হোসেনের কথা, গোপাল কৃষ্ণ মুহুরির কথা, নিদারাবাদের বিরজাবালার কথা। আসলে বাঙালি বিস্মৃতি

মিশিগানের হ্যামট্রাম্যাক সিটির টাউন সেন্টারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহণকারীরা : ছবি : পার্থ দেব

পরায়ন এক জাতি। প্রতিটি আন্দোলন, প্রতিটি নির্বাচনের পরই বিভিষিকা নেমে আসে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের উপর। যে দলই জয়ী হোক না কেন পরাজিত দলের মূল টার্গেট হলো সংখ্যালঘুরা। গত ১০ বছর প্রকৃত অর্থে দেশে কোন নির্বাচন ছিল না এরপরও সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা থেমে থাকেনি, চাই প্রতিরোধ, প্রতিবাদ, এবার অবশ্য সংখ্যালঘুরা ঘুরে দাড়িয়েছেন।