গভীর রাতে বলটুর ফোন। বিরক্ত হয়ে ফোন ধরলাম। রাত দুপুরে ফোন কেন জিজ্ঞাসা করতেই সে বললো নিমন্ত্রণ করতে ফোন মামা।
কিসের নিমন্ত্রণ?
আমি একটা অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছি
কিসের অনুষ্ঠান?
ঐযে আপনারা যেরকম করেছেন ওরকম আর কি
আমরা যেটা করেছি সেটা করতে হবে কেন, কত বিষয় রয়েছে, নতুন কিছু করো। শুধু অনুকরণ কেন? কপি পেষ্ট থেকে বেরিয়ে এসো। আর অনুষ্ঠান করতে যে টাকা লাগবে ওটা দিবে কে?
স্পন্সর পেয়ে গেছি। যার বেইজম্যান্টে অনুষ্ঠান হবে উনি কোন টাকা নেবেন না শুধু আপনারা নিউজে উনার নামটা দিলেই উনি খুশী। আর রাতের ডিনার করাবেন এখানের এক বিশিষ্ট নেতা। উনাকে বলেছি সভায় তিনি থাকবেন প্রধান অতিথি।
এখনতো অনুষ্ঠানে পুরষ্কারের একটা ব্যাপার থাকে।
সেটাতো আছেই। তবে এটা কিন্তু ব্যতিক্রম। আমি পুরষ্কার দিবো দর্শক শ্রোতাকে। কারণ এখন ছোট বক্তা, বড় বক্তা,বিশেষ বক্তা, প্রধাণ বক্তা, নেতা, পাতিনেতা, ভাষণদাতা পাওয়া গেলেও সেগুলো শুনার কোন মানুষ পাওয়া যায় না। বড় কষ্ট করে যোগাড় করতে হচ্ছে।
তা এই পুরষ্কারের টাকা দিবে কে?
মামা আমাদের এলাকার এক মামু আছেন উনি একটা কিনলে তিনটা ফ্রি দেন, উনি দিবেন তবে এক শর্তে তাকে অনুষ্ঠানে বেহালা বাজিয়ে গান গাইতে দিতে হবে।যদিও তিনি জীবনে কোনদিন গান গাননি।
ভাল। অনুষ্ঠান মনে হয় ভালই জমবে।
এই অনুষ্ঠানে আমি আমার লেখা ‘সাংবাদিক কেমনে হইলাম’ গ্রন্থের ২য় খন্ডের মোড়ক উন্মোচন করবো। কৈ এর তেলে কৈ ভাজা আর কি।
ভাল, ভাল। তো গান হবে, বকতিমা হবে, নাচ হবে না? নাচের সাথে গানের একটা সম্পর্ক আছে না, নাচা, গানা, পিনা।
নাচের একজন শিল্পী পেয়েছিলাম কিন্তু তিনি এত জোরে নাচেন, আসলে নাচেন না ফাল পাড়েন তাতে বেইজম্যান্ট ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা থাকায় বেইজম্যান্টের মালিক রিস্ক নিতে রাজী হননি।
আর কিছু ?
ঐ অনুষ্ঠানের শেষের দিকে একটা দারুণ চমক থাকবে।
সেটা আবার কি?
না মানে করনাকালিন সময়ে নিউইয়র্ক ও দেশ থেকে আমাদের এলাকার প্রচুর মানুষজন এখানে এসেছেন। ভাবছি আমাদের এলাকার নামে এখানে একটি সংগঠন করবো আর ঐ অনুষ্ঠানে সম্ভাব্য সভাপতি পদে আমার নামটা ঘোষণা করবো।
ভাল আর কিছু ?
মামা আশীর্বাদ করবেন।
তাতো অবশ্যই।
ফোনটা রেখে ঘুমাতে গেলাম। একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এলো। আমি দেখছি কনান্ট অ্যাভিনিউ ধরে দামী একটি গাড়ী ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে, রাস্তার দুই পাশ্বে মানুষ উকি দিয়ে দেখছে আমাদের আগামী দিনের নেতা বলটুকে।