ম্যাসাচুসেটসের ডোভারে ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী টিনা কামাল (৫৪) ও তাঁদের মেয়ে আরিয়ানা কামালকে (১৮) হত্যার পর রাকেশ কামাল (৫৭) আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তাঁদের মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে, এটিকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে ২ জানুয়ারী মঙ্গলবার নরফোক ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি (ডিএ) মাইকেল মরিসের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে। সিবিএস নিউজ বোষ্টন,এনবিসি ১০ বোষ্টন, মেস লাইভ ডট কম, নিউইয়র্ক পোষ্ট সুত্রে এ খবর জানা গেছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ডোভারে প্রাসাদসম বাড়ি থেকে এ তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাকেশ কামালের মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল একটি আগ্নেয়াস্ত্র।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ‘রাকেশ কামাল আত্মহত্যা করে মারা গেছেন বলে মনে হচ্ছে।’ তার মৃতদেহের পাশে একটি ৪০ ক্যালিভারের গ্লক (Glock) ২২ পাওয়া গেছে। জেলা এটর্নি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী মৃতদেহের পাশে পাওয়া বন্দুকটির কোন লাইসেন্স ছিল না রাকেশ কামালের। বন্দুকটি কোথা থেকে এসেছে তার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ বিভাগ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ময়নাতদন্তের চুড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নরফোক ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি (ডিএ) মাইকেল মরিস এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, আরিয়ানা কামাল মিডলবারি কলেজে নিউরোসায়েন্স বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন। তার মা টিনা কামাল মিলটনের একটি স্কুলের পিতামাতাদের একটি সংগঠনের প্রধান ছিলেন। তিনি ম্যাসাচুসেটসের আমেরিকান রেড ক্রসের আঞ্চলিক পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। রেড ক্রস এই পরিবারের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
রাকেশ কামাল ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল অন লাইনের ব্যবস্থা পরিচালক ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল।
গত ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ডোভার পুলিশ ফোন কল পেয়ে কামালের বাসায় গিয়ে একি পরিবারের তিনটি মৃতদেহ দেখতে পায়।
২০১৯ সালে কামাল পরিবার ৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ৫ একর জমি ও ১১ বেড রুমের একটি প্রাসাদসম বাড়ী কিনেছিলেন যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ীতে এই তিন সদস্যই থাকতেন। ম্যাসাচুসেটসের ডোভারের এ এলাকটিতে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা থাকেন এবং এলাকাটি খুবই নিরাপদ।
টিনা ও তাঁর স্বামী আগে এডুনোভা নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্টান পরিচালনা করতেন। প্রতিষ্ঠানটি এখন বিলুপ্ত। বিগত কয়েক বছর ধরে পরিবারটি আর্থিক সংকটে ভুগছিল বলে জানা গেছে। টিনা কামাল ২০২২ সালে ১ মিলিয়ন ডলার থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার দেনা দেখিয়ে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেন। তবে যথার্থ প্রমাণের অভাবে এ মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।