০৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
দুর্গোৎসব

প্রবাসের দুর্গা পুজা : ডেট্রয়েট

কজন বাঙ্গালি জানে যে বাংলাদেশের বাইরে কলকাতার বাইরে রীতিমত ঘটা করে তিথিমতো রীতিনীতি মেনে ফুল বেলপাতা, তুলশীপাতা, আম্র পল্লব, সদ্য ফোটা পদ্মফুল, চন্দন দিয়ে এই শীত প্রধান দেশে গত ১৭ বছর যাবত দুর্গা পূজা করে যাচ্ছে দুর্গা টেম্পল। এ যেন প্রবাসে এক টুকরো বাংলা। নতুন প্রজন্মকে হাজার বছরের বাংলার কৃষ্টি ঐতিহ্য পরিচয় করিয়ে দেয়ার এ প্রচেষ্টা দুর্গা টেম্পল করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্টা লগ্ন থেকে। দুর্গোৎসব এখন আর সনাতনধর্মী বাঙ্গালির উৎসব নয় সেটা এখন সর্বজনীনতা, বিশ্বজনীনতা অর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরে শারদীয় দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২০ অক্টোবর

দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা : ছবি : পার্থ দেব

থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ দিন ব্যাপী বিভিন্ন মন্দির ও সংগঠন এ পূজার আয়োজন করছে। মন্দির ও সংগঠনগুলো পূজার প্রায় দুই মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রবাসের পূজা বেশীরভাগ সময়ই অনুষ্টিত হয় সপ্তাহের কর্ম দিবসে এবং উদযাপন করা হয় সপ্তাহান্তে। প্রবাসের পূজা মানে একে অন্যের সাথে দেখা, মত বিনিময়, আনন্দ উদযাপন। প্রবাসের পূজার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান।কে কার চেয়ে সুন্দর অনুষ্টান উপহার দেয় তার এক প্রতিযোগিতা হয় এ শারদ উৎসবে।

দুর্গা মন্দির থেকে প্রকাশিত স্মরণিকা : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর শুরু কবে ও কোথায় : বৃহত্তর ডেট্রয়েটে বসবাসরত বাঙালিদের উদ্যোগে ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৬ সালে এবং সে বছর থেকেই এখানে নিয়মিত দুর্গা পুজো হয়ে আসছে। বৃহত্তর ডেট্রয়েটে দুর্গা টেম্পল হচ্ছে একমাত্র সর্বজনীন মন্দির। ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামিক, ওয়ারেন, ষ্টার্লিং হাইটস, ট্রয়, শিলবি টাউনশিপ, এ্যান আরবার,উইন্ডসর, শিকাগোসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাঙ্গালিরা এখানে এসে প্রতিমা দর্শন, অঞ্জলি প্রদান করেন। পুজো হয় বৈদিক মতে, এবার তিথিমতো ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূজা হবে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর শনি ও রোববার পুজো উদযাপন করা হবে।

রম্য শ্রুতি নাটক

প্রতিমা : মন্দিরে গত বছরের প্রতিমা রেখে দেয়া হয়েছে এবারের পুজোর জন্য। কয়েক বছর আগে কলকাতা থেকে প্রতিমা আনা হয়েছে। শোলার মূর্তি নির্মাণ করেছেন, কলকাতার  প্রাচীন ও স্বনামধন্য অমরনাথ ঘোষ এন্ড সন্সের শিল্পী কৌশিক ঘোষ।

পুজোর নির্ঘন্ট : তীথিমতো ২০ অক্টোবর শুক্রবার দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ, বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। শাস্ত্রীয় মতে ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ অক্টোবর সপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ভক্তদের সুবিধার্থে সপ্তাহান্তে ২৮ ও ২৯ তারিখ যথাক্রমে  শনি ও রোববার আবার পুজো অনুষ্ঠিত হবে। রোববার রাতে বিজয়া দশমী উদযাপনে সিঁদুর খেলা, একে অপরের ভেদাভেদ ভূলে আলিঙ্গানাবদ্ধ হওয়া, মিষ্টি বিতরণ শেষে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠা এখানকার পুজোর এক আকর্ষণীয় দিক।

ভোগের প্রস্তুতি : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর বৈশিষ্ট : দুর্গা টেম্পল এ অঞ্চলে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত দুর্গা মন্দির। তাই দুই বাংলার বাঙ্গালিরাসহ অবাঙ্গালিরাও এ দুর্গা পুজোয় শামিল হন। এখানকার আমেরিকানরাও এ পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসেন। সন্ধ্যায় আরতি পুরোপুরি দেশীয় ষ্টাইলে হয় বলে এই দৃশ্য দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এখানে আসেন। কারণ এই আবেগঘন মূহুর্তে মনে হয় না আমরা প্রবাসে আছি। মনে হয় যেন সেই পাড়ার মান্ডপের সামনে দাড়িয়ে আমরা আরতি উপভোগ করছি।

পুজোর ভোগ :  পুরোপুরি আচার মেনে মায়ের ভোগ রান্না করা হয় ও রকমারী ভোগ দেয়া হয়। ভাত, পঞ্চব্যঞ্জন, বিভিন্ন ধরণের ভাজা, তরকারী, খিচুড়ি, পায়েশ, লুচি, সন্দেশ, নাড়ু,মিষ্টি, দই এবং বিভিন্ন জাতের ফলফসারী দিয়ে দেবতার ভোগ দেয়া হয়।

বিজয়ার প্রসস্তি : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর আকর্ষণ : ২০ তারিখ সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে ধামাইল গান। গানের সুর আর নৃত্য শ্রোতাদেরে ব্যস্ত নগরী থেকে নিয়ে যাবে আমাদের সেই স্নিগ্ধ মায়াময় গ্রাম বাংলায়, যেখানে তারা কাটিয়েছিলেন তাদের শৈশব. তাদের কৈশোরকাল। কিছুক্ষণের জন্য হলেও সবাইকে নষ্টালজিয়ায় পেয়ে বসবে। পুজো উপলক্ষ্যে ২৮ ও ২৯ তারিখ থাকছে ভক্তিমূলক গান, নৃত্য, রম্য শ্রুতিনাটক, কবিতা আবৃতি, কৌতুক নকশা, অতিথি শিল্পীদের পরিবেশনা এবং ২৯ তারিখ রোববার সন্ধ্যে ৬টায় থাকছে ধর্মীয় নাটক।  অন্যান্য বছরের মত এবারো প্রকাশিত হচ্ছে চারবর্ণা স্মরণিকা “শারদ অর্ঘ্য”।

দুর্গা মন্দিরের অনুষ্টান : ছবি : পার্থ দেব

পূজার স্থান/উদ্যোক্তা :

 ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল
৪২১৫ ইষ্ট মেকনিকলস রোড
ডেট্রয়েট, মিশিগান-৪৮২১২
Website: http://www.durgatemple.net

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

শেলবি টাউনশিপের জোড়া খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার

দুর্গোৎসব

প্রবাসের দুর্গা পুজা : ডেট্রয়েট

আপডেট টাইম : ১১:১৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

কজন বাঙ্গালি জানে যে বাংলাদেশের বাইরে কলকাতার বাইরে রীতিমত ঘটা করে তিথিমতো রীতিনীতি মেনে ফুল বেলপাতা, তুলশীপাতা, আম্র পল্লব, সদ্য ফোটা পদ্মফুল, চন্দন দিয়ে এই শীত প্রধান দেশে গত ১৭ বছর যাবত দুর্গা পূজা করে যাচ্ছে দুর্গা টেম্পল। এ যেন প্রবাসে এক টুকরো বাংলা। নতুন প্রজন্মকে হাজার বছরের বাংলার কৃষ্টি ঐতিহ্য পরিচয় করিয়ে দেয়ার এ প্রচেষ্টা দুর্গা টেম্পল করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্টা লগ্ন থেকে। দুর্গোৎসব এখন আর সনাতনধর্মী বাঙ্গালির উৎসব নয় সেটা এখন সর্বজনীনতা, বিশ্বজনীনতা অর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহরে শারদীয় দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২০ অক্টোবর

দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা : ছবি : পার্থ দেব

থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ দিন ব্যাপী বিভিন্ন মন্দির ও সংগঠন এ পূজার আয়োজন করছে। মন্দির ও সংগঠনগুলো পূজার প্রায় দুই মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রবাসের পূজা বেশীরভাগ সময়ই অনুষ্টিত হয় সপ্তাহের কর্ম দিবসে এবং উদযাপন করা হয় সপ্তাহান্তে। প্রবাসের পূজা মানে একে অন্যের সাথে দেখা, মত বিনিময়, আনন্দ উদযাপন। প্রবাসের পূজার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান।কে কার চেয়ে সুন্দর অনুষ্টান উপহার দেয় তার এক প্রতিযোগিতা হয় এ শারদ উৎসবে।

দুর্গা মন্দির থেকে প্রকাশিত স্মরণিকা : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর শুরু কবে ও কোথায় : বৃহত্তর ডেট্রয়েটে বসবাসরত বাঙালিদের উদ্যোগে ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৬ সালে এবং সে বছর থেকেই এখানে নিয়মিত দুর্গা পুজো হয়ে আসছে। বৃহত্তর ডেট্রয়েটে দুর্গা টেম্পল হচ্ছে একমাত্র সর্বজনীন মন্দির। ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামিক, ওয়ারেন, ষ্টার্লিং হাইটস, ট্রয়, শিলবি টাউনশিপ, এ্যান আরবার,উইন্ডসর, শিকাগোসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাঙ্গালিরা এখানে এসে প্রতিমা দর্শন, অঞ্জলি প্রদান করেন। পুজো হয় বৈদিক মতে, এবার তিথিমতো ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূজা হবে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর শনি ও রোববার পুজো উদযাপন করা হবে।

রম্য শ্রুতি নাটক

প্রতিমা : মন্দিরে গত বছরের প্রতিমা রেখে দেয়া হয়েছে এবারের পুজোর জন্য। কয়েক বছর আগে কলকাতা থেকে প্রতিমা আনা হয়েছে। শোলার মূর্তি নির্মাণ করেছেন, কলকাতার  প্রাচীন ও স্বনামধন্য অমরনাথ ঘোষ এন্ড সন্সের শিল্পী কৌশিক ঘোষ।

পুজোর নির্ঘন্ট : তীথিমতো ২০ অক্টোবর শুক্রবার দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ, বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। শাস্ত্রীয় মতে ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ অক্টোবর সপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ভক্তদের সুবিধার্থে সপ্তাহান্তে ২৮ ও ২৯ তারিখ যথাক্রমে  শনি ও রোববার আবার পুজো অনুষ্ঠিত হবে। রোববার রাতে বিজয়া দশমী উদযাপনে সিঁদুর খেলা, একে অপরের ভেদাভেদ ভূলে আলিঙ্গানাবদ্ধ হওয়া, মিষ্টি বিতরণ শেষে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠা এখানকার পুজোর এক আকর্ষণীয় দিক।

ভোগের প্রস্তুতি : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর বৈশিষ্ট : দুর্গা টেম্পল এ অঞ্চলে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত দুর্গা মন্দির। তাই দুই বাংলার বাঙ্গালিরাসহ অবাঙ্গালিরাও এ দুর্গা পুজোয় শামিল হন। এখানকার আমেরিকানরাও এ পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসেন। সন্ধ্যায় আরতি পুরোপুরি দেশীয় ষ্টাইলে হয় বলে এই দৃশ্য দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এখানে আসেন। কারণ এই আবেগঘন মূহুর্তে মনে হয় না আমরা প্রবাসে আছি। মনে হয় যেন সেই পাড়ার মান্ডপের সামনে দাড়িয়ে আমরা আরতি উপভোগ করছি।

পুজোর ভোগ :  পুরোপুরি আচার মেনে মায়ের ভোগ রান্না করা হয় ও রকমারী ভোগ দেয়া হয়। ভাত, পঞ্চব্যঞ্জন, বিভিন্ন ধরণের ভাজা, তরকারী, খিচুড়ি, পায়েশ, লুচি, সন্দেশ, নাড়ু,মিষ্টি, দই এবং বিভিন্ন জাতের ফলফসারী দিয়ে দেবতার ভোগ দেয়া হয়।

বিজয়ার প্রসস্তি : ছবি : পার্থ দেব

পুজোর আকর্ষণ : ২০ তারিখ সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে ধামাইল গান। গানের সুর আর নৃত্য শ্রোতাদেরে ব্যস্ত নগরী থেকে নিয়ে যাবে আমাদের সেই স্নিগ্ধ মায়াময় গ্রাম বাংলায়, যেখানে তারা কাটিয়েছিলেন তাদের শৈশব. তাদের কৈশোরকাল। কিছুক্ষণের জন্য হলেও সবাইকে নষ্টালজিয়ায় পেয়ে বসবে। পুজো উপলক্ষ্যে ২৮ ও ২৯ তারিখ থাকছে ভক্তিমূলক গান, নৃত্য, রম্য শ্রুতিনাটক, কবিতা আবৃতি, কৌতুক নকশা, অতিথি শিল্পীদের পরিবেশনা এবং ২৯ তারিখ রোববার সন্ধ্যে ৬টায় থাকছে ধর্মীয় নাটক।  অন্যান্য বছরের মত এবারো প্রকাশিত হচ্ছে চারবর্ণা স্মরণিকা “শারদ অর্ঘ্য”।

দুর্গা মন্দিরের অনুষ্টান : ছবি : পার্থ দেব

পূজার স্থান/উদ্যোক্তা :

 ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পল
৪২১৫ ইষ্ট মেকনিকলস রোড
ডেট্রয়েট, মিশিগান-৪৮২১২
Website: http://www.durgatemple.net