ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মিশিগানের বিভিন্ন স্থানে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়েছে। পয়লা বৈশাখ বাঙ্গালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উৎসব। করোনার কারণে গত দুই বছর বর্ষ বরণের এই উৎসব পালন করা হয়নি। তাই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সবার মধ্যেই ছিল বিশেষ আগ্রহ। পহেলা বৈশাখের উৎসব উপলক্ষে প্রতিটি অনুষ্ঠানেই ছিল বৈশাখী সাজ। সবাই রংবেরংয়ের কাপড় পরে অংশ গ্রহণ করেছেন এ অনুষ্ঠানে। বিশেষ করে এখানে বেড়ে ওঠা শিশু কিশোরদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। মিশিগানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে উদযাপন করেছে এ উৎসব, এদের মধ্যে রয়েছে,
দুর্গা মন্দির : গত ১৬ এপ্রিল শনিবার ডেট্রয়েটের দুর্গা মন্দির নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, মন্দিরটি সেজে ছিল বৈশাখী সাজে।মন্দিরের দেয়ালে দেয়ালে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত বিভিন্ন রকমের ছবি, আর এই ছবিগুলি এঁকেছে এই প্রজন্মের প্রতিনিধি মৌমিতা চৌধুরী। মন্দিরের অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সকালে মন্দিরের সম্প্রসারণ করার জন্য ভূমিপূজা, দুপুরে পূজা, আরাধনা, প্রসাদ বিতরণ। মধ্যাহ্নভোজে ছিল পান্তাভাতসহ বিভিন্ন ধরণের নিরামিষ ভর্তা, রকমারি তরকারী, ব্যঞ্জন, বিরুন চালের ভাত, দই পায়েসসহ বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি। বিকেলে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান, ছিল কবিতা আবৃতি, শিশু কিশোরদের গান, নৃত্য। গ্রাম বাংলার দেশীয় আমেজে একদল ছোট্ট সোনামনিদের অংশগ্রহণে ফ্যাশন শো। ছিল স্থানীয় শিল্পীদের গান ও নৃত্য। সবশেষে ছিল নিউইয়র্ক থেকে আগত অতিথি শিল্পী রাজীব ভট্টাচার্যের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা।মন্দিরে ছিল উপচে পড়া ভীড়। দুর্গা মন্দিরের সভাপতি ও কমিটির নেতৃবৃন্দ সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল শিশু, কিশোর কিশোরীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন প্রদীপ চৌধুরী, উর্মিলা সুত্রধর ও পার্থ দেব।
শিব মন্দির : ১৭ এপ্রিল রোববার ওয়ারেন সিটির শিব মন্দিরে নববর্ষ পালিত হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কবিতাপাঠ, সমবেত সঙ্গীত, ছোটদের গান, নাচ, স্থানীয়শিল্পীদের নৃত্য, গান। শিল্পীরা আধুনিক, দেশাত্নবোধক ও লোকগীতি পরিবেশন করেন। সবশেষে ছিল দর্শক শ্রোতাদের অংশ গ্রহণে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। দুপুরে সবাইকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করা হয়।
কালীবাড়ী : ১৬ এপ্রিল শনিবার ওয়ারেন সিটির কালীবাড়ীতে নববর্ষ উদযাপন করা হয়। দুপুরে ছিল পূজা,আরাধনা ও প্রসাদ বিতরণ। বিকেলে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে ছিল কবিতা আবৃতি, ছোটদের অংশ গ্রহণে নাচ, গান। মন্দিরের স্থানীয় শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
দুর্গা মন্দিরে কবিতা আবৃতি করেন প্রদীপ চৌধুরী, অংকুর দেব, অদিতি দেব ও মিনতি চৌধুরী। কোরাশ গান পরিবেশন করেন পল্লবী তালুকদার, বিজয়া চৌধুরী, উর্মিলা সুত্রধর, মিনাক্ষী ধর, অনামিকা দাশ।
সঙ্গীত পরিবেশন করেন নন্দিতা গুহ, অপূর্ব চৌধুরী, অদিতি দেব, অংকুর দেব, জোতস্না বিশ্বাস, প্রত্যুসা ধর, প্রতীশ ধর, মৌমিতা দাশ, নন্দিতা দাশ, নীপা রাণী দেবসহ আরো অনেকে। বেহালা বাজিয়ে শুনান প্রজিতা বিশ্বাস। নৃত্য পরিবেশন করেন নিহি সুত্রধর, অর্চি ছত্রী, অমি দাশ, প্রতীশ ধর, রিত্তিক ধর, রণেশ ধর, প্রত্যুশা ধর, চন্দনা ছত্রী, অনিকা সুত্রধর, অরপিতা দাশ, তৃণা রায়,পিহু দেব, অসমি সুত্রধর, কর্ণ সুত্রধর, কৃষ্ণ চন্দ, রিয়া রায়, অনন্যা চন্দ, অর্পিতা পুরকায়স্থসহ আরো অনেকে।
তবলায় সহযোগিতা করেছেন বাপ্পা দাশ এবং মন্দিরায় ছিলেন লিটন চন্দ।
সবশেষে ছিল আকর্ষণীয় রাফেল ড্র।
ছবি : মিশিগান দর্পণ